ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীকে মদ্যপান করিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলায় জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের বিচারক সত্যব্রত শিকদারের খাসকামরায় এই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন।
তিনি বলেন, প্রধান আসামি মহানগর বিচারক সত্যব্রত শিকদারের আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। এর ফলে মামলার তদন্তকাজ অনেকটা সহজ হবে।
জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
এদিকে শনিবার বিকেল চারটায় মামলার আরেক আসামিকে মুখ্য মহানগর আদালতের হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে নেয়া হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল ইসলাম কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।বিচারক মামলার তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে আটক রাখার নির্দেশ দেন। এ সময় আদালতে ওই আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
এর আগে শুক্রবার আরেক আসামিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই দিন মামলার আরেক আসামি নিহত শিক্ষার্থীর আরেক বন্ধু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
গত ৩১ জানুয়ারি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীর দুই বন্ধুর পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত, যাদের একজন মামলার প্রধান আসামি।
ইউল্যাবের ওই শিক্ষার্থী ৩১ জানুয়ারি রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগেই তাকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন তার বাবা। এই মামলার আগেই মারা যান এক আসামি।
মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে যাকে আসামি করা হয়েছে, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম।
মামলায় বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে আসামি করা দুজনসহ উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে যান ওই শিক্ষার্থী। সেখানে আরও দুজন আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন।
রেস্টুরেন্টে অতিরিক্ত মদ পান করানোয় শিক্ষার্থী অসুস্থবোধ করেন। সেখান থেকে মোহাম্মদপুরে এক বান্ধবীর বাসায় যান তারা। সে বাসায় এক নম্বর আসামিও যান। রাতে তার দ্বারাই শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হন। এরপর ওই বাসায় থাকা অবস্থায় একাধিকবার বমি করে অসুস্থ হন ওই ছাত্রী। এ অবস্থায় পরদিন সকাল সাতটার দিকে প্রথমে ইবনে সিনা হাসপাতাল ও পরে আনোয়ার খান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আইসিইউতে রাখা হয় তাকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুন অর রশীদ বলছেন, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামির সঙ্গে মেয়েটির পূর্বসম্পর্ক ছিল।
নিহত ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসক শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সেলিম রেজা।